Adsterra

ইসরায়েলকে বোকা বানানো কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার

ইসরায়েলকে বোকা বানানো কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh new


অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে। প্রথমে নিশ্চিত না করলেও আজ শুক্রবার ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের অভিযানে নিহত হয়েছেন হামাসের এই শীর্ষ নেতা। হামাস প্রধান হওয়ার আগে থেকেই ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে খুঁজছিল ইসরায়েল। তিনি গোষ্ঠীটির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।


সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতে, ৭ অক্টোবরের হামলার 'মাস্টারমাইন্ড' তথা মূল পরিকল্পনাকারী তিনিই ছিলেন। ওই হামলায় হামাসের বন্দুকধারীরা প্রায় এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করেছিলো এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে এসেছিলো।


ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে অনেকদিন ধরেই খুঁজছিল ইসরায়েল। পাঁচ বছর আগে থেকেই তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির কথা বলে আসছিলেন। প্রথমে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে একটি নোটে এই কথা জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে এক ইতালীয় সাংবাদিককেও জানিয়েছিলেন, তারা যুদ্ধ চান না, যুদ্ধবিরতি চান। সে সময় সাংবাদিকদের হামাস প্রধান বলেছিলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি উপকূলকে উন্নত দেখতে চাই। ‘সিঙ্গাপুরের মতো, দুবাইয়ের মতো।’


ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি  ও মানসিক স্বাস্থ্য


কিন্তু ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েল বলছে, হামাস নেতার সেই বক্তব্য ছিল প্রতারণা ও কৌশল। এই বার্তার মাধ্যমে হামাস তাদের সামরিক শক্তি আড়াল করতে চেয়েছিল। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা গাজা উপত্যকায় নজরদারি কমিয়ে এনেছিলেন, সীমান্তে নিরাপত্তাও শিথিল করেছিলেন।


এরপর থেকে এই ইয়াহিয়াই ছিল ইসরায়েলের মূল টার্গেট। তাদের ধারণা গাজার কোনো সুরঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন তিনি।


৬১ বছর বয়সী ইয়াহিয়ার জন্ম গাজা শহরের খান ইউনিস এলাকায়। ১৯৮০ দশকের শেষ দিকে তিনি হামাসের সামরিক উইং প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। গাজায় দায়িত্বপালন করা চার ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় হিব্রু ও ইসরায়েলি সমাজব্যবস্থা নিয়ে জ্ঞান নেন ইয়াহিয়া। সেখানে নিয়মিত পত্রিকা ও ইসরায়েলি নেতাদের জীবনী পড়তেন। কারাগার থেকেই হামাসের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।


ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তাকে ঠান্ডা মাথায় আকর্ষণীয় নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।


২০০০ এর দশকের শুরুর দিকে কারাগারে থাকা অবস্থায় ইয়াহিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা তীব্র মাথা ব্যাথা ও চোখে সমস্যা দেখা দেয়। সোরোকো মেডিক্যাল সেন্টারে তার অস্ত্রোপচার হয়। তার ব্রেইন থেকে টিউমার অপসারণ করা হয়।


আরো পড়ুন - "কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার"


ইসরায়েলি কারাগারের গোয়েন্দা বিষয়ক প্রধান বেটি লাজাত সেসময় ইয়াহিয়াকে বলেছিলেন, ইসরায়েল তোমার জীবন বাঁচিয়েছে, তুমি আমাদের সঙ্গে যোগ দাও। কিন্তু ইয়াহিয়া রাজি হননি। তিনি কারামুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন।


২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর হামাসের কাছে আটক একজন সেনার বিনিময়ে ১ হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়। তার মধ্যে ছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ারও।


২০১৭ সালে তিনি হামাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিয়োগ হন। গাজা অঞ্চলের নেতা হয়ে যান তিনি। এর আগে হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইসমাইল হানিয়াকে কাতার পাঠানো হয়। গাজার কলামিস্ট আকরাম আতাল্লাহ বলেন, ‘হামাস ও ইয়াহিয়া ইসরায়েলকে বিশ্বাস করিয়েছে যে তারা যুদ্ধ চান না। তারা শান্তি চান, গাজাবাসীর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চান।’


২০২৪ সালে ইসরায়েলের গুপ্তহত্যায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার পর ইয়াহিয়া এই গোষ্ঠীর নতুন নেতা নির্বাচিত হন।

No comments

Powered by Blogger.