Adsterra

যে ক্ষোভ থেকে কঙ্গনা‌কে চড় মারেন এই নারী জওয়ান

যে ক্ষোভ থেকে কঙ্গনা‌কে চড় মারেন এই নারী জওয়ান, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News

চণ্ডীগড় এয়ারপোর্টে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক নারী জওয়ানের বিরুদ্ধে। লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরে গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার পথে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে। কুলবিন্দর কৌর নামের ওই নারী নিরাপত্তারক্ষীকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কুলবিন্দরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারের পাশাপাশি গ্রেপ্তারও করা হয়েছে তাঁকে।


ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, কৃষকদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্যের কারণেই বিজেপি সাংসদকে চড় মেরেছেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। আবার অন্য আরেকটি অংশের দাবি, সিকিউরিটি চেকিংয়ের সময় দুজন বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। আর তা থেকেই চড়কাণ্ডের সূত্রপাত।


গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের মাঝে শাম্ভু সীমান্তসহ ভারতের রাজধানী দিল্লির প্রান্তে টিকরি বা সিঙ্ঘু সীমানা থেকে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কৃষকদের ডাকা ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের জেরে। আন্দোলনকারী কৃষকদের প্রতিহত করতে কংক্রিট ও লোহার ব্যারিকেড, জলকামান, ড্রোন ব্যবহার করে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করা হয়। এই আন্দোলনের মূল দাবিগুলো ছিল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব এবং স্বামীনাথন কমিশনের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন, পুলিশ মামলা প্রত্যাহার এবং লখিমপুর খেরি সহিংসতার শিকারদের জন্য ন্যায়বিচারের জন্য আইনি গ্যারান্টি ইত্যাদি।


তখন সেসব কৃষককে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছিলেন কঙ্গনা রনৌত। এক্সে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘যাঁরা এই সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করছেন বা উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেককে জেলে পাঠানো উচিত। এর আগে এ ধরনের সন্ত্রাসের ভয়েই নাগরিকত্ব অধিকার আইন কার্যকর করা যায়নি। আমি নিশ্চিত, কৃষি আইনও এভাবেই আটকে যাবে। ভোট দিয়ে আমরা জাতীয়তাবাদী সরকার এনেছি ঠিকই। তবে শেষ পর্যন্ত প্রতিবারই জিতে যাচ্ছেন এই জাতীয়তাবাদ বিরোধীরাই।’


পুরুষ কৃষকদের পাশাপাশি নারীরাও সে সময় আন্দোলনে নেমেছিলেন। আর আন্দোলনরত নারীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। ‘নারীরা ১০০ রুপির জন্য কৃষকদের প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন’—অভিনেত্রীর এমন মন্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। চড়কাণ্ডের সূত্রপাত সেখান থেকেই। ঘটনার পর ওই নারী জওয়ানের একটি ভিডিও হয়েছে ভাইরাল।

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই  আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য    বই সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই  আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য

  বই সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

এক্সে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে কুলবিন্দরকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘আমি চড় মেরেছি, কারণ উনি (কঙ্গনা) কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। উনি বলেছিলেন, নারীরা ১০০ রুপির জন্য কৃষকদের প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন। উনি কি সেখানে ছিলেন? আমার মা কিন্তু প্রতিবাদে বসেছিলেন।’


ঘটনার পর কঙ্গনাও একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। সেখানেও উঠে এসেছে কৃষক আন্দোলনের কথা। সেখানে তিনি বলেন, ‘চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে সিকিউরিটি চেকের পরে বেরোনোর সময় অন্য একটি কেবিনে থাকা সিআইএসএফের এক নারী নিরাপত্তাকর্মীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে আঘাত করেন। গালিও দিতে থাকেন। যখন জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কেন করলেন? উনি বললেন, ‘‘কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করি।’’ আমি ভালো আছি, কিন্তু আমার চিন্তা পাঞ্জাবের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে।’


আবার সিকিউরিটি একাংশের দাবি, চেকিংয়ের সময়ে কুলবিন্দর কঙ্গনাকে একটি ট্রেতে ফোন রাখতে বললেও কঙ্গনা তা গ্রাহ্য করেননি। উল্টে এ নিয়ে তর্কাতর্কির মধ্যে কঙ্গনা ধাক্কা মারেন কুলবিন্দরকে। তার জেরেই এত ঘটনা।


পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধীর বাসিন্দা কুলবিন্দর গত দুই বছর চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত। দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর স্বামীও সিআইএসএফ জওয়ান। ভাই শের সিংহ কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির নেতা। মা কৃষক আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।


এদিকে দিল্লি পৌঁছে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের মহাপরিচালক নীনা সিংয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন কঙ্গনা। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। অনেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে কঙ্গনার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, পুরোটাই পরিকল্পিত। কঙ্গনাকে চড় মেরে প্রচারের আলোয় আসা কুলবিন্দর রাজনীতিতে প্রবেশের জন্যই এমনটা করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.